Wednesday, 3 October 2012

Where is Utam Barua?



বুধবার, ০৩ অক্টোবর ২০১২
উত্তম বড়ুয়া কোথায়
রতন কান্তি দেবাশীষ : যার সামাজিক যোগাযোগের ওয়েব সাইট ফেসবুকে ট্যাগ বা শেয়ার করা একটি ছবিতে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগে রামু, উখিয়া ও পটিয়ায় ভয়াবহ ঘটনা ঘটে গেল সেই যুবক উত্তম বড়ুয়ার কোন খোঁজ মিলছে না। রামুর ফতেখারকুল ইউনিয়নের হাইটুপি গ্রামের সেই উত্তম বড়ুয়া কোথায় আছে বা কি অবস্থায় আছে তা কেউ বলতে পারছে না। তার পরিবার বা পুলিশ প্রশাসন কারো কাছে তার সম্পর্কে কোন খবর নেই। কেউ বলছেন তাকে গুম করে ফেলা হয়েছে, আবার কেউ বলছেন সে প্রশাসনের হেফাজতে রয়েছে। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তার কোন খবর তাদের কাছে নেই। গত শনিবার রাত ১০টার দিকে তরুন বড়ুয়ার ফেসবুকে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননা করে একটি ছবি শেয়ার বা ট্যাগ করা হয়। বিষয়টি সাথেসাথেই রামুতে ছড়িয়ে পড়ে। এর আধঘণ্টার মধ্যে পবিত্র কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল বের করে স্থানীয় জনগণ। এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে তারা স্থানীয় বৌদ্ধ পলস্নীতে হামলা চালানো হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর ভোর পর্যমত্ম রামুর বিভিন্ন পলস্নীতে হামলা অব্যাহত ছিল। এসময় রামুতে ১১টি বৌদ্ধ মন্দির, ৩০টি বসত ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ভাঙচুর ও লুটপাট হয় শতাধিক বসত বাড়ি ও দোকানে। এর জের ধরে পটিয়ার কোলাগাঁও ইউনিয়নে হিন্দু ও বৌদ্ধদের চারটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। কিন্তু যার ফেসবুকের শেয়ার বা ট্যাগ করা ছবি নিয়ে এত ভয়াবহ পরিস্থিতি সে উত্তম বড়ুযাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি চার দিনেও। শনিবার সন্ধ্যার পরও সে নিজ এলাকায় ছিল। কিন্তু ঘটনার পর থেকে তার কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তার বাড়িঘরও গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেদিন শতশত লোক তার খোঁজ করতে থাকে। তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয় পুলিশ প্রশাসনের কাছে। চার দিনেও তার খোঁজ না পাওয়ার ঘটনায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিক্ষোভের সময় লোকজন তাকে তার বাড়ি ও আশপাশের এলাকায় খোঁজ করেছে। অনেকের ধারণা, সেদিনই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে তাদের হেফাজতে নিয়েছে। কিন্তু পুলিশ বলছে, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। কেউ কেউ ধারণা করছেন, পরিস্থিতির ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে সে তখনই আত্মগোপন করে। হয়তো নিজেকে রক্ষা করতে তার কোন আত্মীয়-স্বজনের বাসায় আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। না তার পরিবার, না পুলিশ প্রশাসন কারো কাছে তা কোন খোঁজ নেই। অনেকের মতে, ভয়ে সে তাৎক্ষণিকভাবে চট্টগ্রাম শহর বা অন্য কোথাও গিয়ে আত্মগোপন করতে পারে। আবার অনেকের মতে, বিক্ষুব্ধ লোকজন তাকে ধরে নিয়ে যেতে পারে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, উত্তর বড়ুয়ার কোন খবর তারা জানে না। সে কোথায় আছে বা কি অবস্থায় আছে সে ব্যাপারে কিছুই জানে না তারা। অপরদিকে পুলিশ সুপার সেলিম মো. জাহাঙ্গীর বলেন, পুলিশ উত্তম বড়ুয়াকে অনেক খোঁজাখুজির পরও পায়নি। জেলার বিভিন্ন স্থানে তাকে খোঁজ করা হয়েছে, কিন্তু খোঁজ মিলছে না। হয়ত কোথাও আত্মগোপন করে থাকতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন। একই কথা বলছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। তিনি জানান, উত্তম বড়ুয়াকে আমরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করেছি, কিন্তু পাচ্ছি না। তার গ্রামের লোকজন উত্তম বড়ুয়ার বিষয়ে কোন ধরনের মুখ খুলছেন না। তারা শুধু বলছেন তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। কোথায় গেছে তা তাদের জানা নেই।

No comments:

Post a Comment