Sunday 14 October 2012

ছয় ঘণ্টার তদন্তে ‘উদ্ভট আবিষ্কার’ রামু উখিয়া টেকনাফ পটিয়ায় প্রত্যাখ্যান


ছয় ঘণ্টার তদন্তে ‘উদ্ভট আবিষ্কার’
রামু উখিয়া টেকনাফ পটিয়ায় প্রত্যাখ্যান
মোয়াজ্জেমুল হক/এইচএম এরশাদ ॥ কক্সবাজারের বিলাসবহুল পাঁচতারকা মানের একটি হোটেলে পর পর দু’রাত অবকাশ যাপনের মতো সময় কাটিয়ে, চারটি স্পটে মাত্র ছয় ঘণ্টা অবস্থান করে ব্যা,ম,আ (ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ) নেতৃত্বাধীন বিএনপির সংসদীয় তদন্ত দলের রিপোর্ট এলাকায় প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ার বৌদ্ধবিহার ও মন্দিরে এবং বসতঘরসমূহে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাবলী সরকারী মদদে-ইন্ধনে হয়েছে বলে যে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে তা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে অনাকাক্সিক্ষত, অনভিপ্রেত ও চরম মিথ্যাচার বলে প্রতীয়মান হয়েছে। অনেকে এ ধরনের রিপোর্ট প্রত্যাহার করে নেয়ারও দাবি জানিয়েছে। কেননা, প্রধান বিরোধী দলের পক্ষে প্রণীত এ ধরনের রিপোর্ট ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আরও ক্ষতিকর এবং দোষীদের পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগের আশঙ্কা রয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৌদ্ধবিহার ও হিন্দুদের মন্দিরে হামলার ঘটনার পর বেসরকারী পর্যায়ে বিভিন্ন সংস্থা এবং সরকারবিরোধী বিভিন্ন মত ধারার সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ পরিদর্শন করেও এ ধরনের সরকারবিরোধী সরাসরি অভিযোগ আনতে পারেননি। কিন্তু বিএনপির সংসদীয় তদন্ত দলের ব্যানারে যে রিপোর্ট হয়েছে তা তাদের নিজেদের ‘উদ্ভট আবিষ্কার’ বলেও মত ব্যক্ত করা হচ্ছে। দুই জেলার চার স্পটে সব মিলিয়ে মাত্র ছয় ঘণ্টা অবস্থান করে বিএনপির সংসদীয় তদন্ত দল ‘সরকারী মদদে এসব ঘটনা ঘটেছে’ বলে যে তথ্য উদ্ঘাটন করেছে তা তাদের অপরাজনীতির কৌশল বলেও উল্লেখ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের রামু, উখিয়া, টেকনাফ এবং পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৌদ্ধবিহার, হিন্দু মন্দির ও সংখ্যালঘুদের বসতবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর বিএনপির পক্ষে ৮ সদস্যের সংসদীয় তদন্ত দল গঠন করা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যা,ম,আ-কে আহ্বায়ক করে এ কমিটিতে অন্যদের মধ্যে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব) রুহুল আলম চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ, গৌতম চক্রবর্তী ও অধ্যাপক সুকোমল বড়–য়া।
বিএনপির সংসদীয় এ তদন্ত টিম গত ৪ অক্টোবর সন্ধ্যার পর কক্সবাজার গিয়ে পৌঁছেন। তারা রাত্রি যাপন করেন হোটেল সীগাল-এ। ৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টায় তদন্ত দল রামুতে পৌঁছে। সেখানে সব মিলিয়ে দু’ঘণ্টা অবস্থানকালে ৫টি বিহার পরিদর্শন করে এবং ৪-৫ জন ভিক্ষু ও ৭-৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনের বক্তব্য নেন। এ সময় সংবাদ কর্মীদের অনেকেই তাদের সঙ্গে ছিলেন। রামুতে দু’ঘণ্টা অবস্থানের পর সংসদীয় কমিটি তদন্ত টিমের পক্ষে ব্যারিস্টার মওদুদ সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, রামুর হামলা পরিকল্পিত। এতে প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে, পুলিশ ছিল নীরব। দুপুর ১২টার মধ্যে তদন্ত টিম কক্সবাজার ফিরে যায়। সেখান থেকে বিকেল সাড়ে ৪টায় তারা যান উখিয়ায়। সেখানে তাঁরা প্রায় দু’ঘণ্টা অবস্থান করে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি বিহার পরিদর্শন করেন। কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সঙ্গে। এরপর তদন্ত দল সোজা টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং এলাকায় পৌঁছে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। সেখানকার জোয়ারিয়া খোলায় একই স্থানে হামলা হয়েছে বড়–য়া ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৭ পরিবারের ওপর। সর্বোচ্চ ৪৫ মিনিটের মতো হোয়াইক্ষ্যংয়ে অবস্থান করে তদন্ত দল ফিরে আসে কক্সবাজারের সীগাল হোটেলে। টেকনাফ এবং উখিয়ায় তাঁরা সুনির্দিষ্ট কোন মন্তব্য করেননি। বরং স্থানীয় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে মওদুদ বলেন, ‘আপনারাই ভাল জানবেন কারা এ এলাকায় ঘটনা ঘটিয়েছে।’
তদন্ত টিম কক্সবাজারের একই হোটেলে দ্বিতীয় রাত যাপন করেন ৫ অক্টোবর। ৬ অক্টোবর সকালে হোটেলে স্থানীয় জামায়াত নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তদন্ত দলের একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের কোন তথ্য দেয়া হয়নি কোন দলের পক্ষে। এরপর তাঁরা রওনা দেন পটিয়ার উদ্দেশে। দুপুর ২টা নাগাদ তাঁরা পৌঁছেন চট্টগ্রামের পটিয়ায়। পটিয়ায় তদন্ত দলের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পরিদর্শন কাজ শুরু হয় দুপুর ৩টায়। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি বিহার ও মন্দির পরিদর্শন করে কথা বলেন বেশকিছু ক্ষতিগ্রস্ত ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে। স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, পুলিশী ব্যর্থতার জন্যই এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঢাকায় ফিরে গিয়ে গত ৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল বৈঠকে মওদুদ বলেন, রামুর ঘটনায় প্রশাসন নির্লিপ্ত ছিল। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তাঁদের বলেছেন, এ ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। এর আগে তাঁদের প্রণীত রিপোর্ট ৪ অক্টোবর দলীয় চেয়ারপার্সনের হাতে উপস্থাপন করা হয়। চেয়ারপার্সনের পক্ষে প্রয়োজনীয় পরিবর্ধন, পরিমার্জন, সংযোজন ও বিয়োজন শেষে গত ১২ অক্টোবর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন আহ্বান করে ৬৭ পৃষ্ঠার এ তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে তদন্ত কমিটি।
বিএনপির এ তদন্ত কমিটি দলীয় হলেও তা নিরপেক্ষ বলে দাবি করা হয়েছে ব্যারিস্টার মওদুদের পক্ষ থেকে। রিপোর্টে চার স্পটের এ ঘটনা সরকারী মদদ ও ইন্ধনে হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে এবং এর জন্য বিগত দুটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথমত, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি বাধাগ্রস্ত করা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা ও বাংলাদেশ একটি জঙ্গীরাষ্ট্র হয়ে গেছেÑ এ ভয় দেখিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা। এ ছাড়া রিপোর্টে একজন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবিও করা হয়েছে।
প্রকাশিত তদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ব্যারিস্টার মওদুদ যা বলেছিলেনÑ তার বহু পার্থক্য রয়েছে। ফলে গত শুক্রবার বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং শনিবার বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিএনপির তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর তা এলাকাসমূহে এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে শুধু প্রত্যাখ্যাতই হয়নি, উল্টো তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক বিরোধিতা হিসেবে সরকারী দলকে জনসমক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে ‘তদন্ত রিপোর্ট’ নামের একটি প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে দলীয় চেয়ারপার্সনকে দিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে, কমিটির রিপোর্ট কী কারণে জনসম্মুখে প্রকাশের আগে চেয়ারপার্সনের হাতে প্রদান করা হলো। চেয়ারপার্সন তা ৮ দিন নিজ হাতে রেখে তাঁর ইচ্ছা ও আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে তা প্রকাশ করিয়েছেন। ফলে বাস্তবতার সঙ্গে ওই রিপোর্টের সামঞ্জস্যতা খুঁজে পাচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার লোকজন।
সংশ্লিষ্টদের মনে এ প্রশ্নও সৃষ্টি হয়েছে, নিজ এলাকায় প্রত্যাখ্যাত এবং চেয়ারপার্সনের ছেড়ে দেয়া আসনে উপনির্বাচনে জয়ী করে আনা ব্যা, ম, আ’র নেতৃত্বাধীন বিএনপির সংসদীয় দলের তদন্ত রিপোর্টও বিহার মন্দিরে হামলার মতো পূর্বপরিকল্পনার অংশ কি না? রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও পটিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বিএনপির এ তদন্ত রিপোর্ট দেখে হতবাক হয়েছেন। এদের অনেকে শনিবার অভিযোগ করেছেন, কারা হামলা করেছে এবং নেতৃত্ব দিয়েছে তা তারা বিএনপির সংসদীয় টিমকে বলে দেয়ার পরও সরকারী মদদে এ হামলা হয়েছে বলে কিভাবে উল্লেখ করা হলো তা তাদের বোধগম্য নয়।
রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন এবং বিহার অধ্যক্ষরা বিএনপির তদন্ত টিমকে একযোগে জানিয়েছেন, ধর্মান্ধ উগ্রবাদীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত সমর্থকরাই তদন্ত টিমকে ঘটনায় সরকার বা আওয়ামী লীগ জড়িত বলে আখ্যায়িত করেছে। কিন্তু বিএনপির তদন্ত কমিটির প্রকাশিত রিপোর্টে উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে রামুর ৬০ ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে ৩৩ জনের লিখিত জবানী।
শনিবার রামুর স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বিএনপি তদন্ত রিপোর্ট সঠিক নয়। পুলিশ ও প্রশাসনের অবহেলা থাকতে পারে। কিন্তু সরকার মদদ দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে বিএনপি তদন্ত কমিটির যে রিপোর্ট তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট, লজ্জাকরও বটে। রামুর ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে রামুতেই উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ ওই দিন বলেছিলেন ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। ওই সময় তিনি স্থানীয় বিএনপির এমপির পক্ষে সাফাইও গেয়েছেন। কোন দল বা ব্যক্তিগত কাউকে অভিযুক্তও করেননি। বিএনপির তদন্ত রিপোর্টে রামুর ক্ষতিগ্রস্ত বড়–য়া পল্লীর লোকজন ও বিহার অধ্যক্ষরা হতবাক হয়েছেন। এদের অনেকে বিএনপির প্রকাশিত তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাহার করারও আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, এতবড় জঘন্য ঘটনার পর মনগড়া কোন প্রতিবেদন তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। রামু উত্তর মিঠাছড়ি ক্যাং পরিচালনা কমিটির সভাপতি তরুণ বড়–য়া ও সাধারণ সম্পাদক টিটু বড়–য়া বলেন, রামুর অপূরণীয় ক্ষতির ঘটনায় দোষী ব্যক্তিরা আইনের আওতায় আসুক এবং স্থানীয় লোকজন শান্তিতে বসবাস করুক এটাই সকলের কাম্য। এ ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করা কখনও কাম্য নয়। উখিয়ার মরিচ্যার সোনাধন বড়–য়া ও সুজন বড়–য়া জানান, বিএনপির তদন্ত দল উখিয়ায় পরিদর্শনকালে ক্ষতিগ্রস্ত বড়–য়া পল্লীর কেউই তো তাদের কাছে কোন দল বা নেতাদের উস্কানি রয়েছে মর্মে এ ধরনের সাক্ষ্য দেননি। সরকারের মদদ রয়েছে বলে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ তদন্ত রিপোর্টে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে দোষী ব্যক্তিরা পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগের আশঙ্কা রয়েছে। পালংখালীর ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু ধনরাম শীল বলেন, অযথা ক্ষমতাসীন দলের উস্কানি বা লোকজন জড়িত থাকার বিষয়ে কথা বলা মানে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার শামিল এতে ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী ও ধ্বংসলীলায় জড়িতরা পার পেয়ে যেতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। রামু উত্তর মিঠাছড়ি এলাকায় মধ্যরাতে দুষ্কৃতকারীরা বৌদ্ধবিহারে হামলে পড়লে সাহসিকতার পরিচয় বহনকারী স্থানীয় বাসিন্দা ন্যাপ নেতা শামীম আহসান ভুলু, এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম ও প্রবীণ সাংবাদিক আমির হোছাইন হেলালী বিহার ও বড়–য়াদের রক্ষায় এগিয়ে আসেন। দুষ্কৃতকারীদের প্রতিহত করতে গিয়ে ওই সময় ভুলু আহতও হয়েছেন। তারা শনিবার বিভিন্ন পত্রিকায় বিএনপি তদন্ত দলের সংবাদ সম্মেলন ও খালেদা জিয়ার কাছে জমা দেয়া প্রতিবেদনের ভাষ্য পড়ে হতবাক হয়েছেন। তারা বলেন, আমরাই ওই রাতে ঘটে যাওয়া ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। বিএনপি সংসদীয় তদন্ত দলের এ ধরনের মিথ্যা ও কাল্পনিক তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের দারুণ মর্মাহত করেছে

No comments:

Post a Comment