Sunday 14 October 2012

রামুর ঘটনায় সরকার আগুন নিয়ে খেলছে ॥ হুঁশিয়ারি খালেদার সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বরদাশত করা হবে না


রামুর ঘটনায় সরকার আগুন নিয়ে খেলছে ॥ হুঁশিয়ারি খালেদার
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বরদাশত করা হবে না
স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংখ্যালঘুদের জান-মাল ও উপাসনালয়ের ওপর কোন প্রকার হুমকি বা ক্ষতিসাধন বিএনপি বরদাশত করবে না বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, রামু-উখিয়া ও পটিয়ায় বৌদ্ধমন্দির ও সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনা নিয়ে ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টাকে আগুন নিয়ে খেলার শামিল বলে শাসকদের সতর্ক করছি এবং অবিলম্বে একটি বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের জন্য আবারও জোর দাবি জানাচ্ছি।
চেয়ারপার্সনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, রামু-উখিয়া ও পটিয়ায় বৌদ্ধ মন্দির ও সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনা কেন ঘটল এবং কারা এর পেছনে ইন্ধন যুগিয়েছে তার কোন বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত, প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার ও আইন মোতাবেক শাস্তির কোন উদ্যোগ আজ প্রায় দুই সপ্তাহ গত হবার পরেও বাংলাদেশের জনগণ পায়নি। বরং সরকার এই গুরুতর বিষয়টিকে রাজনৈতিক রঙে রঞ্জিত করে প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমন ও সঙ্কীর্ণ ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা করছে। এ অবস্থায় আমরা চুপ করে থাকতে পারি না।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, সংখ্যালঘুদের জান-মাল ও উপাসনালয়ের ওপর কোন প্রকার হুমকি বা ক্ষতিসাধন আমরা বরদাশত করতে পারি না। সকল প্রকার ধর্মীয় ও নৃ- গোষ্ঠীগত উগ্রতার আমরা তীব্র নিন্দা করি এবং ধর্ম, নৃ-গোষ্ঠী বা জাতিগত ভিন্নতা বা বৈচিত্র্যকে কোন প্রকার হীন সাম্প্রদায়িক স্বার্থে ব্যবহার করার অপপ্রয়াসকে আমাদের প্রতিহত করতেই হবে। 
বিরোধীদলীয় নেতা বলেন,পার্বত্য অঞ্চলে আজ সংখ্যালঘুরা যেভাবে শারীরিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও মানসিকভাবে মর্মাহত হয়েছেন এবং অমর্যাদাবোধে ভুগছেন তা দ্রুত দূর করার দায়িত্ব আমাদের সকলকে নিতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে যে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের রক্ষার মধ্য দিয়েই কেবল আমরা আমাদের ঐক্য ও শক্তি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হব। বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও যা অত্যন্ত জরুরী। তিনি বলেন, আমি আমার দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছি যে, তাঁরা যেন দৃঢ়তার সঙ্গে এই নীতির ওপর দাঁড়িয়ে তাদের সমস্ত মন-প্রাণ ও শক্তি-সামর্থ্য দিয়ে প্রতিটি জেলায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন, যাতে এ ধরনের কোন ঘটনা ভবিষ্যতে আর কখনও না ঘটে। এ ধরনের ঘটনা ঘটাবার দুঃসাহস যেন কারও না হয়। দলমতনির্বিশেষে দেশবাসীর প্রতিও আমার একই আহ্বান। আমাদের প্রমাণ করতে হবে যে, জাতি-ধর্ম-গোষ্ঠী নির্বিশেষে আমরা প্রত্যেকেই ‘বাংলাদেশী’ এবং এই দেশের নাগরিক। 
খালেদা জিয়া বলেন,দেশে-বিদেশে বাংলাদেশীরা এই ঘটনায় যেমন উদ্বিগ্ন, তেমনি এই জঘন্য হামলার ঘটনা বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের সকলের মাথা হেট করে দিয়েছে। এ ঘটনার ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে কোন বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের নিশ্চয়তা না পাওয়ায় বন্ধুদেশগুলো বিব্রত এবং বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। এভাবে অপরাধ ও অপরাধীকে প্রশ্রয় দেয়ার কারণে বাংলাদেশের সমাজ ও জনগণের প্রতি প্রতিবেশী দেশগুলোর জনগণের মধ্যে যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়ে চলেছে তা উপমহাদেশে বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বাংলাদেশকে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। 
বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, আমরা এই গুরুতর ঘটনা নিয়ে ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টাকে আগুন নিয়ে খেলার শামিল বলে শাসকদের সতর্ক করছি এবং অবিলম্বে একটি বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের জন্য আবারও জোর দাবি জানাচ্ছি।

No comments:

Post a Comment