কক্সবাজারে সুলতানা কামাল
বৌদ্ধমন্দিরে হামলার ঘটনায় আমরা লজ্জিত ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ
নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার | তারিখ: ১১-১০-২০১২
কক্সবাজারে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল
প্রথম আলো
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেছেন, ‘রামুর বৌদ্ধমন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমরা লজ্জিত, ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ। কোনো বিবেকবান মানুষ এই বর্বর ঘটনা মেনে নিতে পারে না। আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।’
গতকাল বুধবার সকালে কক্সবাজার পৌরসভা মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল এ কথা বলেন। আসক, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন যৌথভাবে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আসকের চেয়ারপারসন হামিদা হোসেন, সুলতানা কামাল ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক রীনা রায়। গত মঙ্গলবার সারা দিন তাঁরা রামু, উখিয়া ও টেকনাফের ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধমন্দির ও বসতি এলাকা পরিদর্শন করেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গত ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা থেকে ধর্মান্ধ ষড়যন্ত্রকারীরা যখন সভা ও মিছিল করছিল, স্থানীয় প্রশাসন তখন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনপ্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ বা ঘটনার ব্যাপকতা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। শান্তিপূর্ণ ও নিরপরাধ জনগোষ্ঠীর ওপর নিষ্ঠুর আক্রমণ, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগের ঘটনার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের কী ভূমিকা ছিল, তা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। এ ধরনের নৃশংসতা ও ভয়াবহতা আকস্মিক কোনো ঘটনা নয়, এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। এই হামলা, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগ শুধু বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর নয়, আমাদের জাতিসত্তার ওপর আঘাত।’
হামিদা হোসেন বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে লুটতরাজ তাদের মনোবলকে ভেঙে দিয়েছে। তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর নৃশংস আক্রমণের কারণে যে আস্থাহীনতার সৃষ্টি হয়েছে, তা পূরণে সংখ্যাগরিষ্ঠ স্থানীয় জনসাধারণকেই এগিয়ে আসতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের সাহস জোগাতে হবে। সামাজিক সব কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সুলতানা কামাল বলেন, ‘রামুর হামলার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আমরা ঘটনার প্রতিকার ও প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ আশা করেছিলাম। অথচ মন্ত্রী কক্সবাজার ছেড়ে যাওয়ার পরপরই উখিয়া উপজেলায় একাধিক বৌদ্ধমন্দিরে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে এবং লুণ্ঠিত ঐতিহাসিক ও অমূল্য সম্পদগুলোর একটিও উদ্ধার হয়নি। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর কোনো সন্তোষজনক অগ্রগতিও হয়নি।’
সুলতানা কামাল বলেন, ‘মন্দিরে হামলার ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে একে অপরকে দোষারোপ করা হচ্ছে। এতে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমাদের আশঙ্কা, এতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার পরিবর্তে অনাস্থা ও নিরাপত্তাহীনতার জন্ম দিচ্ছে। অবিলম্বে এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত থাকার জন্য সব রাজনৈতিক পক্ষকে অনুরোধ করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হচ্ছে: বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনপ্রশাসনের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা প্রমাণিত হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের নিরাপত্তাসহ সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থান ও সম্প্রীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, অনতিবিলম্বে ক্ষতির যথাযথ মাত্রা নিরূপণ করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পরিপূর্ণ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং লুণ্ঠিত ধর্মীয় পুরাকীর্তি উদ্ধার এবং সব ধর্মীয় স্থাপনা অনতিবিলম্বে পুরনায় নির্মাণ করা।
গতকাল বুধবার সকালে কক্সবাজার পৌরসভা মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সুলতানা কামাল এ কথা বলেন। আসক, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন যৌথভাবে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আসকের চেয়ারপারসন হামিদা হোসেন, সুলতানা কামাল ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক রীনা রায়। গত মঙ্গলবার সারা দিন তাঁরা রামু, উখিয়া ও টেকনাফের ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধমন্দির ও বসতি এলাকা পরিদর্শন করেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গত ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা থেকে ধর্মান্ধ ষড়যন্ত্রকারীরা যখন সভা ও মিছিল করছিল, স্থানীয় প্রশাসন তখন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনপ্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ বা ঘটনার ব্যাপকতা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। শান্তিপূর্ণ ও নিরপরাধ জনগোষ্ঠীর ওপর নিষ্ঠুর আক্রমণ, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগের ঘটনার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের কী ভূমিকা ছিল, তা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। এ ধরনের নৃশংসতা ও ভয়াবহতা আকস্মিক কোনো ঘটনা নয়, এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। এই হামলা, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগ শুধু বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর নয়, আমাদের জাতিসত্তার ওপর আঘাত।’
হামিদা হোসেন বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে লুটতরাজ তাদের মনোবলকে ভেঙে দিয়েছে। তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর নৃশংস আক্রমণের কারণে যে আস্থাহীনতার সৃষ্টি হয়েছে, তা পূরণে সংখ্যাগরিষ্ঠ স্থানীয় জনসাধারণকেই এগিয়ে আসতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের সাহস জোগাতে হবে। সামাজিক সব কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সুলতানা কামাল বলেন, ‘রামুর হামলার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আমরা ঘটনার প্রতিকার ও প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ আশা করেছিলাম। অথচ মন্ত্রী কক্সবাজার ছেড়ে যাওয়ার পরপরই উখিয়া উপজেলায় একাধিক বৌদ্ধমন্দিরে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে এবং লুণ্ঠিত ঐতিহাসিক ও অমূল্য সম্পদগুলোর একটিও উদ্ধার হয়নি। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর কোনো সন্তোষজনক অগ্রগতিও হয়নি।’
সুলতানা কামাল বলেন, ‘মন্দিরে হামলার ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে একে অপরকে দোষারোপ করা হচ্ছে। এতে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমাদের আশঙ্কা, এতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার পরিবর্তে অনাস্থা ও নিরাপত্তাহীনতার জন্ম দিচ্ছে। অবিলম্বে এ ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত থাকার জন্য সব রাজনৈতিক পক্ষকে অনুরোধ করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হচ্ছে: বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনপ্রশাসনের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতা প্রমাণিত হলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের নিরাপত্তাসহ সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থান ও সম্প্রীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, অনতিবিলম্বে ক্ষতির যথাযথ মাত্রা নিরূপণ করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পরিপূর্ণ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং লুণ্ঠিত ধর্মীয় পুরাকীর্তি উদ্ধার এবং সব ধর্মীয় স্থাপনা অনতিবিলম্বে পুরনায় নির্মাণ করা।
No comments:
Post a Comment