Sunday 14 October 2012

বিবৃতিতে খালেদা জিয়া সংখ্যালঘুদের ক্ষতি বরদাশত করা হবে না


ঢাকা, রবিবার ১৪ অক্টোবর ২০১২, ২৯ আশ্বিন ১৪১৯, ২৭ জিলকদ ১৪৩৩

বিবৃতিতে খালেদা জিয়াসংখ্যালঘুদের ক্ষতি বরদাশত করা হবে না নিজস্ব প্রতিবেদক
সংখ্যালঘুদের জানমাল ও উপাসনালয়ে কোনো রকমের হুমকি বা ক্ষতি বিএনপি বরদাশত করবে না বলে সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, রামু, উখিয়া ও পটিয়ায় বৌদ্ধমন্দির এবং সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা কেন ঘটল এবং কারা এর পেছনে ইন্ধন জুগিয়েছে এর কোনো বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত, প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির কোনো উদ্যোগ প্রায় দুই সপ্তাহ পরও জনগণ দেখতে পায়নি। বরং সরকার এই গুরুতর বিষয়টিকে রাজনৈতিক রং দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমন ও সংকীর্ণ ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টা করছে। এ অবস্থায় বিরোধী দল চুপ করে থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। প্রেসসচিব মারুফ কামাল খান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে খালেদা জিয়া আরো বলেন, 'পার্বত্য অঞ্চলে আজ সংখ্যালঘুরা যেভাবে শারীরিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও মানসিকভাবে মর্মাহত হয়েছে এবং অমর্যাদাবোধে ভুগছে- তা দ্রুত দূর করার দায়িত্ব সবাইকে নিতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের রক্ষার মধ্য দিয়েই কেবল আমরা আমাদের ঐক্য ও শক্তি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হব। বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যা অত্যন্ত জরুরি।' তিনি দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, "মনপ্রাণ ও শক্তি-সামর্থ্য দিয়ে প্রতিটি জেলায় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে এ ধরনের কোনো ঘটনা ভবিষ্যতে আর না ঘটে। এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর দুঃসাহস যেন কারো না হয়। দলমত নির্বিশেষে দেশবাসীর প্রতি একই আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের প্রমাণ করতে হবে, জাতি-ধর্ম-গোষ্ঠী নির্বিশেষে আমরা প্রত্যেকেই 'বাংলাদেশি' এবং এই দেশের নাগরিক।"
খালেদা জিয়া বলেন, 'রামুর এই ঘটনায় দেশে-বিদেশে বাংলাদেশিরা যেমন উদ্বিগ্ন, তেমনি বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের সবার মাথা হেঁট করে দিয়েছে। এ ঘটনার ব্যাপারে সরকারের তরফ থেকে কোনো বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের নিশ্চয়তা না পাওয়ায় বন্ধু দেশগুলো বিব্রত এবং বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। এভাবে অপরাধ ও অপরাধীকে প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের সমাজ এবং জনগণের প্রতি প্রতিবেশী দেশগুলোর জনগণের মধ্যে যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়ে চলেছে, তা উপমহাদেশে বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বাংলাদেশকে জবাবদিহি করতে হচ্ছে।' গুরুতর এই ঘটনা নিয়ে ফায়দা হাসিলের অপচেষ্টাকে আগুন নিয়ে খেলার শামিল বলে শাসকদের সতর্ক করে দিয়ে অবিলম্বে একটি বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের জন্য আবারও জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
মার্কিন কূটনীতিকের সঙ্গে শমসের মবিনের বৈঠক : পলিটিক্যাল কাউন্সিলরসহ ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের দুই কূটনীতিকের সঙ্গে গতকাল শনিবার দুপুরে গুলশান এভিনিউর এক অভিজাত রেস্তোরাঁয় বৈঠক করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী। ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সম্প্রতি কক্সবাজারের রামুর ঘটনায় বিএনপির নিজস্ব তদন্ত কমিটির সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। তদন্ত প্রতিবেদন বিদেশি দূতাবাসগুলোর কাছে পৌঁছানোর অনুরোধ জানিয়েছিলেন বৌদ্ধ সম্প্রদারের নেতারা। তদন্ত প্রতিবেদনের একটি কপি যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বলেও সূত্র জানায়।

No comments:

Post a Comment