Wednesday, 3 October 2012

উত্তম বড়ূয়াকে ফাঁসানো হয়েছে


বুধবার | ৩ অক্টোবর ২০১২ | ১৮ আশ্বিন ১৪১৯ | ১৬ জিলকদ ১৪৩৩
উত্তম বড়ূয়াকে ফাঁসানো হয়েছে


সাহাদাত হোসেন পরশ
গোয়েন্দা পুলিশের ধারণা, একটি ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে রামুর নিরীহ বৌদ্ধ তরুণ উত্তম কুমার বড়ূয়া। তার ফেসবুকে একটি বিতর্কিত ছবি ট্যাগ করার খবর ছড়িয়ে দিয়ে বৌদ্ধ মন্দিরে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর একটি ন্যক্কারজনক ঘটনার পর উত্তম বড়ূয়ার ফেসবুকের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয় সরকারের একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা। ইতিমধ্যে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, ২৭ সেপ্টেম্বর 'ইনসাল্ট আল্লাহ' নামে ওই বিতর্কিত 'পেজ' উত্তম বড়ূয়ার ফেসবুকে ট্যাগ করা হয়েছিল। পেজটি তৈরি করা হয় যুক্তরাষ্ট্রে। উত্তম বড়ূয়ার ফেসবুক ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে বৌদ্ধ উপাসনালয়ে হামলা করা হয়েছে। এদিকে বৌদ্ধ উপাসনালয়ে হামলার ঘটনায় রোহিঙ্গাদের দিকে সন্দেহের তীর থাকলেও নেপথ্যে মৌলবাদী শক্তির ইন্ধন ছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
র‌্যাবের
ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের প্রধান লে. কর্নেল জিয়াউল হাসান সমকালকে বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্যে মনে হয়, বৌদ্ধ উপাসনালয়ে হামলার ঘটনায় রোহিঙ্গারা জড়িত। তবে মৌলবাদী শক্তি তাদের ব্যবহার করেছে।
বৌদ্ধ উপাসনালয়ে হামলার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আনোয়ার হোসেন। তিনি সমকালকে বলেন, রামু ও উখিয়ায় হামলার ঘটনা পরিকল্পিত। এতে স্থানীয় রোহিঙ্গারা জড়িত থাকতে পারে। নাশকতায় গান পাউডার ব্যবহার করা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, হামলাকারীরা সংঘবদ্ধ শক্তি।
জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে উত্তম কুমার বড়ূয়া নিরুদ্দেশ। পুলিশ তার মা ও বোনকে হেফাজতে নিয়েছে। উত্তম বড়ূয়ার ফেসবুকে বিতর্কিত ওই ছবিটি ট্যাগ করার পেছনে কারা জড়িত_ তা শনাক্ত করতে গোয়েন্দারা কাজ করছে। ঘটনার পেছনে
যুদ্ধাপরাধীদের হাত রয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোন সূত্র থেকে গান পাউডার এসেছে, তা নিয়ে তিনটি গোয়েন্দা সংস্থা পৃথকভাবে কাজ করছে। মোবাইল কললিস্টের সূত্র ধরে হামলায় জড়িত ও নেপথ্য নায়কদের খোঁজা হচ্ছে।
এদিকে কক্সবাজারের বৌদ্ধ উপাসনালয়ে হামলার পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) টেকনাফ, উখিয়া, রামুসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর গতকাল সমকালকে বলেন, বৌদ্ধ উপাসনালয়ে হামলায় ঘটনায় রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করা হয়েছে। যারা পেছন থেকে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করেছে, তাদের দ্রুত শনাক্ত করা হবে। ধর্মীয় মৌলবাদী শক্তি ছাড়াও যারাই বৌদ্ধ উপাসনালয়ে হামলায় ইন্ধন দিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

No comments:

Post a Comment