ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ অক্টোবর ২০১২, ১৯ আশ্বিন ১৪১৯, ১৭ জিলকদ ১৪৩৩
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ অক্টোবর ২০১২, ১৯ আশ্বিন ১৪১৯, ১৭ জিলকদ ১৪৩৩
সরেজমিন উখিয়া
হামলাকারীদের চিনলেও ভয়ে নাম বলছে না কেউ
কামরুল হাসান ও আব্দুল কুদ্দুস, কক্সবাজার থেকে | তারিখ: ০৪-১০-২০১২
‘১০ ঘণ্টা পাহারা দিয়ে রাখলাম। একসময় দেখলাম, ওরা দল বেঁধে ধেয়ে আসছে। মনে হচ্ছিল আর পারব না। মন্দিরের ফটকে আমি ওদের পায়ে ধরি। কিন্তু কেউ আমার কথা শুনল না। আমাকে মাড়িয়েই ওরা ভাঙচুর শুরু করে। ওদের পায়ের নিচে চাপা পড়ে আমি জ্ঞান হারাই।’
কথাগুলো বলতে বলতে চোখ মুছলেন উখিয়া ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনার প্রভাষক শাহ আলম। উখিয়ার শত বছরের লেজুরকুল বৌদ্ধমন্দির ভাঙার সময় তিনি ছিলেন প্রতিবাদী। তাঁর মতো আরেক প্রতিবাদী লেজুরকুলের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নুরুল কবীর। কিন্তু কেউ কিছুই করতে পারেননি। রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে মন্দিরটি ভাঙচুর আর লুটপাট করা হয়।
রামুর বৌদ্ধপল্লিতে হামলা-ভাঙচুরের পরদিন উখিয়ার বৌদ্ধমন্দিরে হামলা হয়। এ উপজেলার ৩২টি বৌদ্ধমন্দিরের পাঁচটি ভাঙচুর ও লুটপাট হয় আর পুড়িয়ে দেওয়া হয় দুটি। তবে রামুর ঘটনার সঙ্গে উখিয়ার ঘটনার মিল নেই। রামুতে হামলা করেছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা অজ্ঞাত লোকজন। আর উখিয়ায় হামলা করেছে বৌদ্ধদেরই প্রতিবেশী মুসলমানরা। এদের কেউ ছাত্র, কেউ ইমাম, কেউ চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী বা বেকার যুবক। আছে সব দলের মানুষ। আর আছে একদল জঙ্গি রোহিঙ্গা।
ঘটনার শিকার ও হামলাকারী সবাই সবাইকে চেনেন। কিন্তু হামলার পর সেই চেনা লোকটার নাম বলতে পারছেন না বৌদ্ধরা। ফোন করে তাঁদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, কারও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে। কাউকে বলা হচ্ছে, বাড়াবাড়ি করলে ভিটাছাড়া করা হবে। হুমকি থেকে বাদ নেই পুলিশ প্রশাসনের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারাও।
জেলা পুলিশ সুপার সেলিম মো. জাহাঙ্গীর হুমকির কথা স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘হুমকিদাতাদের নাম পুলিশকে জানানোর জন্য সবাইকে বলা হয়েছে। একজন হুমকিদাতার ফোন নম্বর পেয়েছি।’
উখিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী নিজেই অভিযোগ করলেন, মন্দিরে হামলার পর এখন বৌদ্ধদের ফোন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কয়েকজন তাঁকে এ হুমকির কথা জানিয়েছেন। এসব নিয়ে তিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানান, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ১০-১২ হাজার রোহিঙ্গার হাতে বাংলাদেশের মোবাইল ফোনের সিম আছে। এসব সিম ব্যবহার করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
এই নেতার সঙ্গে কথা বলার সময় পাশে বসে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ হোসেন খান। তিনি বলেন, উখিয়ার অনেক কিছুই এখন রোহিঙ্গারা নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের সহায়তা করছে ‘মুসলিম এইড’ নামের একটি আন্তর্জাতিক এনজিও। তিনি বলেন, উখিয়ায় অনেক মসজিদের ইমাম রোহিঙ্গা। রামুর ঘটনার পর তাঁরা লোকজনকে উসকানি দিয়েছেন। হামলার ঘটনায় জামায়াত সহায়তা দিয়েছে।
তবে জামায়াতের কক্সবাজার জেলার সেক্রেটারি জি এম রহিমুল্লাহ বলেন, জামায়াত কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা করে না। পুলিশ অযথা নিরীহ লোকদের গ্রেপ্তার করছে।
উখিয়ার পাতাবাড়ি বৌদ্ধবিহারের পাশে বাস করেন বিনয় বড়ুয়া। তাঁর মন্দিরটি হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছে। এখন তাঁকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিনয় বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ফোন তাঁকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোর দোতলা বাড়িটি জ্বালিয়ে দেব।’
কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফের দিকে ৪২ কিলোমিটার গেলে উখিয়ার পশ্চিম মরিচ্যা দীপঙ্কর বৌদ্ধবিহার। গতকাল সকালে সেখানে গিয়ে দেখা গেল, শত বছরের পুরোনো মন্দিরটি একেবারেই ছাই হয়ে গেছে। এ মন্দিরের ১২০টি মূর্তি ছিল, এখন একটিও নেই। মন্দিরের ভিক্ষু বিমল জ্যোতি জানালেন, রামুতে হামলার পরদিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে প্রথমে মরিচ্যা বাজার থেকে একটি মিছিল আসে। এরপর মন্দিরের তিন দিক থেকে তিনটি মিছিল আসে। মিছিলের যুবকদের হাতে ছিল কেরোসিনের পাত্র। চোখের পলকে তারা মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ এলাকায় ১১৭ ঘর বৌদ্ধ আছে। ভয়ে তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। মিছিলকারীরা মন্দিরের পাশে দুটি বৌদ্ধবাড়িতে লুট করে।
কারা এ হামলা চালাল? জানতে চাইলে বিমল জ্যোতি কারও নাম বলতে অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাকে প্রতিনিয়ত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে টুকরো টুকরো করে কেটে সাগরে ফেলে দেব।’ মন্দির কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবুল বড়ুয়া বলেন, ‘হামলার পর আমরা প্রাণনাশের হুমকিতে আছি। দয়া করে বিপদে ফেলবেন না। আপনারা বাজারের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলেই হামলাকারীদের নাম জানতে পারবেন।’
মরিচ্যা বাজারে গেলে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ওই রাতে স্থানীয় জামায়াতের সদস্য মোহাম্মদ আলম, কায়সার আহমেদ, মনিয়া ভুলু, নুরুল আলমসহ কয়েকজন মিছিল বের করে মন্দিরে হামলা চালান। তাঁরা সুলতানিয়া আজিজুল উলুম নামের একটি মাদ্রাসার কথাও বলেন। তবে ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাঁর মাদ্রাসার ছাত্রদের বয়স পাঁচ থেকে ১৭ বছর। এরা সন্ধ্যার পরে কেউ বের হয় না। তারা কোনোভাবেই এর সঙ্গে জড়িত নয়।
উখিয়া বাজারে পৌঁছার একটু আগে মূল সড়কের পাশে রাজা পালং জাদি বৌদ্ধবিহার। ১৮৬৭ সালে স্থাপিত এ বৌদ্ধবিহারে হামলা হয়েছে (৩০ সেপ্টেম্বর) দিনের বেলায়। বেলা সাড়ে তিনটার সময় রাজা পালং এলাকার শতাধিক লোক হামলা চালায়। মন্দিরে থাকা যুবক সাগর বড়ুয়া বলেন, হামলাকারীদের চেনেন কিন্তু ভয়ে নাম বলতে পারছেন না। এক লোক ফোন করে তাঁদের হুমকি দিচ্ছেন বলে জানান।
গতকাল স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, তাঁরা এখনো এসব ঘটনার তদন্তই শুরু করতে পারেননি। রামুর ঘটনায় ব্যবহার করা বারুদ (গান পাউডার), কংক্রিটের চারকোনা টুকরা, ট্রাক-বাস কীভাবে, কোত্থেকে এল, তার উত্তরও খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ।
পুলিশ সুপার সেলিম জাহাঙ্গীর বললেন, ‘সিআইডির অপরাধ চিহ্নবিশেষজ্ঞরা আজ আসছেন। তাঁরা খুঁজে দেখবেন গান পাউডার ব্যবহার করা হয়েছিল কি না।’
এদিকে বৌদ্ধমন্দিরে হামলার পর বিভিন্ন স্থানে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। তবে রামুসহ কিছু এলাকা থেকে গতকাল ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুধু আজ সকাল আটটা পর্যন্ত টেকনাফে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হতে পারে।
কথাগুলো বলতে বলতে চোখ মুছলেন উখিয়া ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনার প্রভাষক শাহ আলম। উখিয়ার শত বছরের লেজুরকুল বৌদ্ধমন্দির ভাঙার সময় তিনি ছিলেন প্রতিবাদী। তাঁর মতো আরেক প্রতিবাদী লেজুরকুলের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নুরুল কবীর। কিন্তু কেউ কিছুই করতে পারেননি। রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে মন্দিরটি ভাঙচুর আর লুটপাট করা হয়।
রামুর বৌদ্ধপল্লিতে হামলা-ভাঙচুরের পরদিন উখিয়ার বৌদ্ধমন্দিরে হামলা হয়। এ উপজেলার ৩২টি বৌদ্ধমন্দিরের পাঁচটি ভাঙচুর ও লুটপাট হয় আর পুড়িয়ে দেওয়া হয় দুটি। তবে রামুর ঘটনার সঙ্গে উখিয়ার ঘটনার মিল নেই। রামুতে হামলা করেছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা অজ্ঞাত লোকজন। আর উখিয়ায় হামলা করেছে বৌদ্ধদেরই প্রতিবেশী মুসলমানরা। এদের কেউ ছাত্র, কেউ ইমাম, কেউ চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী বা বেকার যুবক। আছে সব দলের মানুষ। আর আছে একদল জঙ্গি রোহিঙ্গা।
ঘটনার শিকার ও হামলাকারী সবাই সবাইকে চেনেন। কিন্তু হামলার পর সেই চেনা লোকটার নাম বলতে পারছেন না বৌদ্ধরা। ফোন করে তাঁদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, কারও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে। কাউকে বলা হচ্ছে, বাড়াবাড়ি করলে ভিটাছাড়া করা হবে। হুমকি থেকে বাদ নেই পুলিশ প্রশাসনের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারাও।
জেলা পুলিশ সুপার সেলিম মো. জাহাঙ্গীর হুমকির কথা স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘হুমকিদাতাদের নাম পুলিশকে জানানোর জন্য সবাইকে বলা হয়েছে। একজন হুমকিদাতার ফোন নম্বর পেয়েছি।’
উখিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক চৌধুরী নিজেই অভিযোগ করলেন, মন্দিরে হামলার পর এখন বৌদ্ধদের ফোন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কয়েকজন তাঁকে এ হুমকির কথা জানিয়েছেন। এসব নিয়ে তিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানান, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ১০-১২ হাজার রোহিঙ্গার হাতে বাংলাদেশের মোবাইল ফোনের সিম আছে। এসব সিম ব্যবহার করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
এই নেতার সঙ্গে কথা বলার সময় পাশে বসে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ হোসেন খান। তিনি বলেন, উখিয়ার অনেক কিছুই এখন রোহিঙ্গারা নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের সহায়তা করছে ‘মুসলিম এইড’ নামের একটি আন্তর্জাতিক এনজিও। তিনি বলেন, উখিয়ায় অনেক মসজিদের ইমাম রোহিঙ্গা। রামুর ঘটনার পর তাঁরা লোকজনকে উসকানি দিয়েছেন। হামলার ঘটনায় জামায়াত সহায়তা দিয়েছে।
তবে জামায়াতের কক্সবাজার জেলার সেক্রেটারি জি এম রহিমুল্লাহ বলেন, জামায়াত কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা করে না। পুলিশ অযথা নিরীহ লোকদের গ্রেপ্তার করছে।
উখিয়ার পাতাবাড়ি বৌদ্ধবিহারের পাশে বাস করেন বিনয় বড়ুয়া। তাঁর মন্দিরটি হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছে। এখন তাঁকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিনয় বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ফোন তাঁকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোর দোতলা বাড়িটি জ্বালিয়ে দেব।’
কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফের দিকে ৪২ কিলোমিটার গেলে উখিয়ার পশ্চিম মরিচ্যা দীপঙ্কর বৌদ্ধবিহার। গতকাল সকালে সেখানে গিয়ে দেখা গেল, শত বছরের পুরোনো মন্দিরটি একেবারেই ছাই হয়ে গেছে। এ মন্দিরের ১২০টি মূর্তি ছিল, এখন একটিও নেই। মন্দিরের ভিক্ষু বিমল জ্যোতি জানালেন, রামুতে হামলার পরদিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে প্রথমে মরিচ্যা বাজার থেকে একটি মিছিল আসে। এরপর মন্দিরের তিন দিক থেকে তিনটি মিছিল আসে। মিছিলের যুবকদের হাতে ছিল কেরোসিনের পাত্র। চোখের পলকে তারা মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ এলাকায় ১১৭ ঘর বৌদ্ধ আছে। ভয়ে তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। মিছিলকারীরা মন্দিরের পাশে দুটি বৌদ্ধবাড়িতে লুট করে।
কারা এ হামলা চালাল? জানতে চাইলে বিমল জ্যোতি কারও নাম বলতে অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাকে প্রতিনিয়ত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে টুকরো টুকরো করে কেটে সাগরে ফেলে দেব।’ মন্দির কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবুল বড়ুয়া বলেন, ‘হামলার পর আমরা প্রাণনাশের হুমকিতে আছি। দয়া করে বিপদে ফেলবেন না। আপনারা বাজারের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলেই হামলাকারীদের নাম জানতে পারবেন।’
মরিচ্যা বাজারে গেলে কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ওই রাতে স্থানীয় জামায়াতের সদস্য মোহাম্মদ আলম, কায়সার আহমেদ, মনিয়া ভুলু, নুরুল আলমসহ কয়েকজন মিছিল বের করে মন্দিরে হামলা চালান। তাঁরা সুলতানিয়া আজিজুল উলুম নামের একটি মাদ্রাসার কথাও বলেন। তবে ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাঁর মাদ্রাসার ছাত্রদের বয়স পাঁচ থেকে ১৭ বছর। এরা সন্ধ্যার পরে কেউ বের হয় না। তারা কোনোভাবেই এর সঙ্গে জড়িত নয়।
উখিয়া বাজারে পৌঁছার একটু আগে মূল সড়কের পাশে রাজা পালং জাদি বৌদ্ধবিহার। ১৮৬৭ সালে স্থাপিত এ বৌদ্ধবিহারে হামলা হয়েছে (৩০ সেপ্টেম্বর) দিনের বেলায়। বেলা সাড়ে তিনটার সময় রাজা পালং এলাকার শতাধিক লোক হামলা চালায়। মন্দিরে থাকা যুবক সাগর বড়ুয়া বলেন, হামলাকারীদের চেনেন কিন্তু ভয়ে নাম বলতে পারছেন না। এক লোক ফোন করে তাঁদের হুমকি দিচ্ছেন বলে জানান।
গতকাল স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, তাঁরা এখনো এসব ঘটনার তদন্তই শুরু করতে পারেননি। রামুর ঘটনায় ব্যবহার করা বারুদ (গান পাউডার), কংক্রিটের চারকোনা টুকরা, ট্রাক-বাস কীভাবে, কোত্থেকে এল, তার উত্তরও খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ।
পুলিশ সুপার সেলিম জাহাঙ্গীর বললেন, ‘সিআইডির অপরাধ চিহ্নবিশেষজ্ঞরা আজ আসছেন। তাঁরা খুঁজে দেখবেন গান পাউডার ব্যবহার করা হয়েছিল কি না।’
এদিকে বৌদ্ধমন্দিরে হামলার পর বিভিন্ন স্থানে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। তবে রামুসহ কিছু এলাকা থেকে গতকাল ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুধু আজ সকাল আটটা পর্যন্ত টেকনাফে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হতে পারে।
No comments:
Post a Comment